বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিকের পর্দা ওঠা আর কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা মাত্র। করোনা মহামারি ছাড়াও চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে বিভিন্ন এলিট দেশের এই অলিম্পিক বয়কট নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্ব তৈরি করেছিল অলিম্পিক ঘিরে। কিন্তু সবকিছুই এখন অতীত। সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আজ (শুক্রবার) পর্দা উঠছে বেইজিংয়ে আজ পর্দা উঠছে ২৪তম শীতকালীন অলিম্পিক গেমসের।
শীতকালীন অলিম্পিকের ২০২২ আসরে থাকছে ৯০টি দেশের ২ হাজারের অধিক অ্যাথলেট। ১৫ ডিসিপ্লিনারিতে ১০৯টি ইভেন্টে হবে পদকের লড়াই।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায় বেইজিং ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে শুরু হবে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। এরই মধ্যে প্রায় শেষ হয়ে এসেছে অলিম্পিক আয়োজনের সব ধরনের প্রস্তুতি।
বিশ্বের ২ হাজার ৮৭১ জন অ্যাথলেট বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিচ্ছেন এবারের আসরে। এদের মধ্যে পুরুষ ১ হাজার ৫৮১ জন এবং নারী অ্যাথলেট রয়েছেন ১ হাজার ২৯০ জন।
তবে বাংলাদেশের কোনো অ্যাথলেট অংশ নিচ্ছেন না এতে। আসর চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
তিনটি অলিম্পিক ভিলেজে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে অ্যাথলেটদের জন্য। তবে চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার কারণে গেমসে দর্শক সংখ্যা ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনা হতে পারে বলে জানিয়েছে আয়োজকরা।
অনেকেই এখন বেইজিংকে ডাকছেন ‘ডাবল অলিম্পিক সিটি’ বলে। কারণ, বেইজিংই হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র শহর, যে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের পাশাপাশি শীতকালীন অলিম্পিক গেমস আয়োজনের সুযোগ পেয়েছে। সবাই জানেন, বেইজিং ২০০৮ সালে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজন করেছিল। সেটি ছিল স্মরণকালের সফলতম অলিম্পিকগুলোর একটি। শুধু তাই নয়, চীন সেবারই প্রথম অলিম্পিকের পদকতালিকার শীর্ষস্থানটিও দখল করতে সক্ষম হয়েছিল।
বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিককে ‘পরিবেশবান্ধব অলিম্পিক’ বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। কারণ, গেমসকে ‘কার্বননিরপেক্ষ’ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীনের সরকার। অলিম্পিককে ঘিরে যত ধরনের কর্মকাণ্ড চলবে, কোনোটিতেই কার্বন-ডাই-অক্সাইড নির্গত হবে না। অন্যভাবে বললে, অলিম্পিকের কোনো কাজে এমন কোনো জ্বালানি বা যন্ত্র ব্যবহার করা হবে না, যা কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন করবে। উল্টো কার্বন-ডাই-অক্সাইড দিয়ে তৈরি হবে বরফ, অলিম্পিকের মশাল জ্বলবে সবুজ জ্বালানিতে, যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা হবে বিদ্যুৎচালিত গাড়ি ও ট্রেন। অলিম্পিকের ইতিহাসে এমনটি আগে কখনও ঘটেনি।
বেইজিং শীতকালীন অলিম্পিককে ‘সাশ্রয়ী অলিম্পিক’ বলেও দাবি করা হচ্ছে। এ অলিম্পিক আয়োজনে আনুমানিক ৩৯০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় হবে, যা ২০০৮ সালের গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের ব্যয়ের দশ ভাগের এক ভাগেরও কম। ২০০৮ বেইজিং অলিম্পিক আয়োজনে চীনের ব্যয় হয়েছিল ৪৩০০ কোটি মার্কিন ডলার।